আসসালামু আলাইকুম নতুন ব্লগে আপনাকে স্বাগতম আজকের ব্লগটিতে আমরা জানবো কুরআন সম্পর্কে কিছু কথা, মানব জীবনে কোরআনের গুরুত্ব,এবং কোরআন নাযিলের ঘটনা এবং রহস্য । তাহলে চলুন কোরআন সম্পর্কে আমরা এসব কিছু জেনে নেই ।
কুরআন সম্পর্কে কিছু কথাঃ
কুরআন একটি গ্রন্থ ।এটি মুসলিমদের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ হিসাবে পরিচিত। এটি মুসলমানদের ধর্মশাস্ত্র হিসাবে গন্য হয়।
ইসলামের সাথে কুরআনের সম্পর্ক অতীব গুরুত্বপূর্ণ ।
কুরআন মুসলিমদের সব থেকে বড় নির্দেশিকা হিসাবে ব্যবহৃত হয়।এটি মুসলিমদের জীবনের প্রত্যেকটি দিককে পরিবর্তন
ও সংস্কার করার জন্য নির্দেশনা দেয়। কুরআন ধর্মের সাথে জীবনের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়।
কুরআনে বিভিন্ন ধর্মীয় ও মানবিক বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয় । কুরআন হচ্ছে আল্লাহর বাণী ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে জীবনে চলার পথে সমস্ত কিছুর নির্দেশনা দিয়েছেন এই কুরআনে ।
দুনিয়াতে আমরা কিভাবে চলবো কি কি করব সবকিছু কুরআন উল্লেখ আছে । কুরআন পড়লে আমরা জানতে পারবো
কিভাবে আমাদের জীবন যাপন করতে হবে এবং কিভাবে এবাদত করতে হবে । কোরানের নির্দেশনা মোতাবেক চললে
এবং আমাদের জীবন যাপন পরিচালনা করলে আমরা ইহকাল এবং পরকালে শান্তি পাবো ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাঝে কোরআনকে প্রেরণ করেছেন আমাদের জীবনকে সঠিকভাবে
পরিচালনা করার জন্য এবং কিভাবে জীবন যাপন করতে হবে জানানোর জন্য ।
এটি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনের সময় পরিশ্রম করে সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং তার নির্দেশনার ভিত্তিতে অনুবাদিত হয়েছিল।
কুরআন আরবি ভাষায় লিখিত । কুরআনে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা সূরা নাযিল করেছেন ।
এক একটি সূরার মধ্যে আল্লাহ তায়ালা ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন । কোরানে মোট ১১৪ টি সূরা রয়েছে ।
এবং কুরআনে সবগুলো সূরা মিলিয়ে অনেক আয়াত রয়েছে ।কুরআনের মোট আয়াতের সংখ্যা প্রায় ৬,২৩৬ টি।
কুরআন মুসলিমদের ধর্মীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক । একটি মানুষ যদি কোরআনকে সঠিকভাবে বুঝতে পারে
এবং প্রতিটি আয়াতের অর্থ বুঝতে পারে তাহলে সে ব্যক্তি সব থেকে বেশি জ্ঞানী । এবং সেই অনুযায়ী যদি সে আমল করে তাহলে সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে ।
। বিভিন্ন কুরআনের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন মতামত থাকতে পারে, তবে এর মূল অর্থ এবং উদ্দেশ্য একি ।
মানব জীবনে কুরআন এর গুরুত্বঃ
কুরআন মানব জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।এটি মানুষকে নির্দেশনা দেয় এবং আদর্শ স্থাপন করে ।
কুরআন মানুষকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করে । মুসলমানদের জন্য মোট ১০৪টি কিতাব রয়েছে । এর মধ্যে ১০০ টি হল ছোট কিতাব ।
ছোট কিতাবগুলোকে বলা হয় সহিফা কিতাব ।এবং বড় চারটি আসমানী কিতাব রয়েছে । এরমধ্যে সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব হচ্ছে আল কুরআন ।
মানব জীবনে আল কুরআনের গুরুত্ব অপরিসীম । আমাদের জীবন কিভাবে পরিচালিত করতে হবে সকল নির্দেশনা কুরআনে উল্লেখিত আছে ।
কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জন করা যায় এবং সন্তুষ্টি অর্জন করা যায় ।
কোরআন তেলাওয়াত করা কে আল্লাহ তাআলার সাথে কথা বলার সাথে তুলনা করা হয়েছে ।
এই কিতাবে মোত্তাকিদের জন্য নসিহত রয়েছে । আমাদের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
সমগ্র জীবনের ভালো-মন্দ আচার-আচরণ এবং জীবন পরিচালনার সকল দিকনির্দেশনা কোরানে উল্লেখিত রয়েছে ।
Read More:প্রবাসী নিয়ে কষ্টের স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন
কুরআন নাযিলের কারণঃ
কুরআন কিতাবের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব এবং গ্রন্থ । এটি আল্লাহতালার প্রেরিত একটি মহৎ গ্রন্থ । কোরান আল্লাহর বাণী ।
আল্লাহ তাআলা কুরআন নাযিল করেছেন কারণ যাতে আমরা দুনিয়াতে কিভাবে তার ইবাদত করব এ সম্পর্কে জানতে পারি ।
এবং কিভাবে আমরা আমাদের সমগ্র জীবনকে পরিচালনা করব সেই সম্পর্কে কোরআনে সকল নির্দেশনা উল্লেখিত আছে ।
মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনা করার জন্য আল্লাহ তাআলা কুরআন নাজিল করেছেন । দুনিয়াতে যখন আল্লাহ বিরোধী
এবং ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ বেড়েই চলেছিল তখন মানুষকে আল্লাহর পথে ফিরিয়ে আনার জন্যই আল্লাহ তায়ালা
কোরআন নাজিল করেছিলেন ।মানুষকে ইসলাম সম্পর্কে বোঝানোর জন্য এবং সকলকে ইসলাম গ্রহণের জন্য আল্লাহ তার বাণী মানুষদের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছিলেন ।
কুরআন নাযিলের কারণ মূলত মানুষকে ভুল পথ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য এবং আল্লাহর দেখানো পথ অনুযায়ী চলার জন্য ।
মুহাম্মদ (সাঃ) কোরায়েশের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তখন কোরায়েশের সাম্প্রদায়িক প্রথাগত অবস্থা খারাপ ছিল ।
তখনকার মানুষ আল্লাহকে মানত না পূজা করত আরো অনেক ধরনের খারাপ কাজ করত এবং পাপ কাজ করতো ।
মানুষ তখন শিরকের মত খারাপ কাজগুলো করত তাই আল্লাহ তা’আলা মানুষদেরকে আল্লাহর বানী প্রেরণ করেন ।

কুরআন নাযিলের ইতিহাসঃ
৬১০ খ্রিস্টাব্দ ও রমজান মাসের কদরের রজনীতে হেরা পর্বতের গুহায় সর্বপ্রথম জিবরাঈল এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা
তার বাণী প্রেরণ করেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ।
মোট ২২ বছর ৫ মাস ১৪ দিন ধরে আল্লাহ তা’আলা কোরআন নাজিল করেন । সর্বপ্রথম সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত নাযিল করা হয় ।
এবং প্রথম নাজিলকৃত পূর্ণ সুরা হলো সুরা ফাতিহা।
কোরান মাজিদের যে কথাটি এবং যে শব্দটি প্রথম এসেছে তা হল ইকরা যার অর্থ তুমি পড়ো।
এর সর্বশেষ নাজিলকৃত সুরা হলো সুরা আন-নসর এবং সর্বশেষ নাজিলকৃত আয়াত হলো সুরা বাকারা আয়াত নং ২৮১ ।
কোরআন নাজিল শেষ হয় হিজরি ১১ সালের সফর মাসে।
এর সর্ববৃহৎ সুরা হলো সুরা বাকারা। এর আয়াত সংখ্যা হোল ২৮৬ টি ।
এর সবচেয়ে ছোট সুরা হলো সুরা কাওসার। এর আয়াত সংখ্যা ৩।
কুরআন এর গঠন প্রণালীঃ
কোরআনের মোট শব্দ ৮৬ হাজার ৪৩০টি ।
মোট অক্ষর তিন লাখ ৪৭ হাজার ৮৩৩টি, মতান্তরে তিন লাখ ৪৯ হাজার ৩৭০টি, মতান্তরে তিন লাখ
৫১ হাজার ২৫২টি।কোরআনের মোট মনজিল সাতটি এবং পারা ৩০টি।কোরআনের মোট হরকত—জের ৩৯ হাজার ৫৮২,
জবর ৫২ হাজার ২৩৪, পেশ হলো আট হাজার ৮০৪, জজম এক হাজার ৭৭১, নুকতা এক লাখ পাঁচ হাজার ৬৮১ টি ।
পবিত্র কোরআনের মোট সুরা ১১৪টি। এর মধ্যে মাক্কি সুরা (হিজরতের আগে বর্ণিত) ৯২টি, মাদানি সুরা (হিজরতের পরে বর্ণিত) ২২টি।কোরআনে মোট ৫৪০টি রুকু আছে।