আসসালামু আলাইকুম । নতুন ব্লগে আপনাকে স্বাগতম । আজকের এই ব্লগে আমরা কথা বলব গোপালপুরে গড়ে ওঠা ২০১ গম্বুজ মসজিদ সম্পর্কে । ২০১ গম্বুজ মসজিদ এর ইতিহাস স্থাপত্য এবং তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করব । তাহলে চলুন গোপালপুর এর ২০১ গম্বুজ মসজিদ সম্পর্কে সকল তথ্য জেনে নেওয়া যাক ।
আমাদের বাংলাদেশের মুসলিমের সংখ্যা বেশি । এবং সকল মানুষ ধর্মপ্রান ।মুসলমানদের জন্য সবথেকে বড় স্থাপনা হচ্ছে মসজিদ ।
মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর ঘর । তাই মুসলমানদের জন্য মসজিদ সব থেকে প্রিয় জায়গা ।
আল্লাহ তায়ালার সন্নিকটে যাওয়ার জন্য মুসলমানরা মসজিদে যায় ।
ইসলামী স্থাপত্যের এক মহিমান্বিত প্রতীক হচ্ছে গোপালপুর ২০১ গম্বুজ মসজিদ ।২০১ গম্বুজ মসজিদ একটি দুর্দান্ত কাঠামো এবং
ইসলামী স্থাপত্যের অনন্য এক সৌন্দর্য এবং মহিমার প্রতীক হিসেবে গড়ে উঠেছে ।গোপালপুরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই মসজিদ ।
এই মসজিদের নজর কারা নকশা এবং বিস্ময়কর বড় বড় গম্বুজের আকৃতি সারা বিশ্বের মানুষদের বিমোহিত করেছে ।
![](https://infobdtech.com/wp-content/uploads/2023/06/201_Dome_Mosque_06-2.jpg)
২০১ গম্বুজ মসজিদঃ
এই মসজিদটি গড়ে উঠেছে গোপালপুরের পান কেন্দ্রে । তাই এই মসজিদটি গোপালপুর মসজিদ নামে পরিচিত ।
গোপালপুর শহরটি অনেক সুন্দর আর এই সুন্দর শহরের মধ্যে গড়ে উঠেছে ২০১ গম্বুজ মসজিদ ।
এই মসজিদটি ইসলামিক স্থাপত্যের একটি অনন্য রত্ন । মসজিদটি আকার এবং আয়তনে অনেক বড় হওয়ার কারণে মসজিদে
অনেক মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন । এবং মসজিদটির সৌন্দর্য সারা বিশ্বের সকল মানুষদের নজর কারে ।
এর নকশা করা হয়েছে অনেক সুনিপুণভাবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে । ২০১ গম্বুজ মসজিদটির গম্বুজের আকৃতি এবং সৌন্দর্য
সারা বিশ্বের মানুষদের বিমোহিত করে তুলেছে ।
সাধারণত মসজিদের ছাদের উপর ২০১ টি গম্বুজ থাকার কারণে এই মসজিদটির নাম দেওয়া হয়েছে ২০১ গম্বুজ মসজিদ ।
২০১ গম্বুজ মসজিদের পটভূমিঃ
২০১ গম্বুজ এই মসজিদটি টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুরে অবস্থিত । এটি গোপালপুর উপজেলার পাথালিয়া গ্রামে অবস্থিত ।
পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে বেশি গম্বুজ বৈশিষ্ট মসজিদের স্বীকৃতি পেয়েছে এই মসজিদটি ।
আর মিনারের উচ্চতা যদি চিন্তা করা হয় তাহলে এই মসজিদটির অবস্থান হচ্ছে দ্বিতীয় ।
মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ।
রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে এই মসজিদের কাজ শুরু হয় ।
১৫ বিঘা জমির উপর এই মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ।
মসজিদটি দুই তলা । মসজিদের দৈর্ঘ্য ১৪৪ ফুট এবং প্রস্থ হচ্ছে ১৪৪ ।
মসজিদের সবচেয়ে বড় গম্বুজের উচ্চতা হচ্ছে ৮১ ফুট ।
এছাড়াও আরো ২০০ টি গম্বুজ রয়েছে যার প্রতিটি গম্বুজের উচ্চতা হচ্ছে ১৭ ফুট ।
এছাড়া মসজিদের চার কোনায় রয়েছে চারটি মিনার মিনার গুলোর উচ্চতা হল ১০১ ফুট ।
এবং মসজিদের পাশে একটি মূল মিনার রয়েছে যার উচ্চতা হচ্ছে ৪৫১ ফুট ।
২০১৮ সালের শেষের দিকে এই মসজিদটি নির্মাণ কাজ শেষ হয় ।
ধারণা করা যায় ২০১ গম্বুজ মসজিদের ১৫ হাজার ৩৯ একসাথে নামাজ আদায় করতে পারবে ।
মসজিদের যে প্রধান দরজা রয়েছে সেই দরজাটি তৈরি করা হয়েছে ৫০ মন পিতল ব্যবহার করে ।
Read More : প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩ ( ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ )
নান্দনিক ডিজাইনঃ
২০১ গম্বুজ মসজিদটি আকারের দিক থেকে যতটা বড় ঠিক ততটাই সুন্দর ।
মসজিদের প্রতিটি গম্বুজ এবং মসজিদের গায়ে অনেক সুন্দর ভাবে নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।
মসজিদের স্থাপত্য শৈলী দেখতে অনেক সুন্দর । মসজিদটির ভিতর এবং বাইরের সৌন্দর্য সারা পৃথিবীর সকল মানুষদেরকে বিবাহিত করেছে ।
প্রতিটি মিনার অনেক সুন্দর ভাবে ডিজাইন করে অলংকৃত করা হয়েছে ।
মসজিদটির অলৌকিক সৌন্দর্য সারা পৃথিবীর মানুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং এর সৌন্দর্যের কারণে দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে বিস্মিত করে ।
ডিজাইন এবং কারো কাজে দিক থেকে এই মসজিদটি অন্যতম সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে গড়ে উঠেছে । মসজিদের টাইলস এবং সকল ধরনের কাজ সৌখিন ।
এবং মসজিদ তৈরি করার জন্য যে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে তা বিশ্বের কয়েকটি দেশ থেকে ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করা হয়েছে ।
গম্বুজঃ
গোপালপুরে গড়ে ওঠা মসজিদটিতে রয়েছে ২০১ টি গম্বুজ । হিন্দু থাকার কারণে এই মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে ২০১ গম্বুজ মসজিদ ।
গম্বুজগুলোর আকৃতি এবং এর নান্দনিক ডিজাইন দর্শনার্থীদের নজর কারে । এর প্রতিটি গম্বুজ খুব যত্ন সহকারে কারো কাজ করা হয়েছে জামে
মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে এবং জাঁকজমক করে তুলেছে । গম্বুজগুলো আকারে যেমন বড় ঠিক তেমনি নকশার দিক থেকে দেখতে অনেক সুন্দর ।
শুধুমাত্র একটি মূল গম্বুজ বাদে সবগুলো একই সমান উচ্চতায় হওয়ার কারণে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে ।
এবং গম্বুজের গাঁয়ে টাইলস দ্বারা এবং বিভিন্নভাবে নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ।
শোভাময় বিবরণঃ
২০১ গম্বুজ মসজিদের প্রতিটি গম্বুজ এবং প্রতিটি কোণ অনেক সুন্দর হবে অলংকার করা হয়েছে । এছাড়াও প্রতিটি ছিদ্র জটিল অলঙ্করণে সুশোভিত।
দেয়ালে সুন্দর হবে টাইলস দ্বারা এবং সূক্ষ্ম ক্যালিগ্রাফি থেকে শুরু করে সূক্ষ্ম ভাবে খোদাই করা হয়েছে ।
সম্পূর্ণ মসজিদে চার পাশ দিয়ে একই ধরনের টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে এবং সুন্দরভাবে ডিজাইন করা হয়েছে ।
এছাড়াও মার্বেল পাথর দিয়ে ডিজাইন করার কারণে মসজিদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছে ।
মসজিদটা আকার এবং আয়তনের যতটাই বড় ঠিক ততটাই এর নান্দনিক ডিজাইন এবং এর নকশা অনেক সুন্দর ।
তাৎপর্যঃ
২০১ গম্বুজ মসজিদের তাৎপর্য অপরিসীম । সুক্ষ স্থাপত্য এবং অলংকারিক বিবরণ অনেক সুন্দর ।
২০১ গম্বুজ মসজিদটি আকার এবং আয়তনে অনেক বড় হওয়ার কারণে এখানে অনেক মুসল্লী একসাথে জামাত আদায় করতে পারবে ।
ধারণা করা যায় ১৫০০০ মুসল্লী একসাথে এই মসজিদে একসাথে জামাত আদায় করতে পারবে ।
মসজিদে এতটাই সৌন্দর্য দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ এসে এই মসজিদে জামাত আদায় করে ।
5. দর্শক অভিজ্ঞতাঃ
২০১ গম্বুজ মসজিদটি দেখতে এতটাই সুন্দর যে প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থীর আগমন ঘটে এই মসজিদে ।
মসজিদে দেখার জন্য দূর দুরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা । মসজিদে পা রাখা সত্যি একটি চিত্তাকর্ষক অভিজ্ঞতা ।
২০১ গম্বুজ মসজিদের ভিতরের এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য দর্শকদের মনে অনন্য বিষয় সৃষ্টি করে । দর্শনার্থীদের বিমোহিত করে তোলে এর নান্দনিক ডিজাইন ।
দর্শনার্থীরা মসজিদের দেখতে এসে বিভিন্ন চেম্বার অন্বেষণ করতে পারেন এছাড়াও প্রার্থনা এবং আচরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন ।
মসজিদের নির্মল প্রাঙ্গণটি একটি শান্তিপূর্ণ স্থান প্রদান করে ।
6. সংরক্ষণ ও সংরক্ষণের প্রচেষ্টাঃ
201 গম্বুজ মসজিদের স্থাপত্যের বিস্ময় রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মসজিদের কাঠামোগত অখণ্ডতা নিশ্চিত করতে এবং সময়ের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার প্রচেষ্টা চলছে।
সংরক্ষণ দলগুলি ক্ষতিগ্রস্থ অংশগুলি পুনরুদ্ধার করতে, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ পরিচালনা করতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রশংসা করার জন্য এই ঐতিহাসিক রত্নটিকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপগুলি বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করে।
২০১ গম্বুজ মসজিদটি এবং এর স্থাপত্যের বিস্ময় রক্ষা করা এবং সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
সময়ের বিভিন্ন বিপর্যয় বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মসজিদ থেকে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে । মসজিদটি রক্ষা করার জন্য কর্তৃপক্ষ সবসময় চেষ্টা করে । আমাদের উচিত মসজিদটির সংরক্ষণ এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ করার । নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ পরিচালনা করতে হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই ঐতিহাসিক রত্নটিকে রক্ষা করে রাখতে হবে ।
পরিশেষেঃ
গোপালপুরের ২০১ মসজিদটি ইসলামিক স্থাপত্যের এক অন্যান্য রত্ন । এটি ইসলামিক স্থাপত্যের একটি জাঁকজমকপূর্ণ প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে । মসজিদটির ভেতরের এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য পরিদর্শকদের মুগ্ধ করে তোলে । দেখতে গিয়ে চিন্তা করলে মসজিদে বর্তমানে সব থেকে বেশি গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ । এবং এটি আকার এবং আয়তনের দিক থেকে অনেক বড় হওয়ার কারণে এখানে হাজারো মুসল্লী একসাথে নামাজ পড়তে পারে ।
আপনারা যারা এখনো গোপালপুরের ২০১ গম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন করেন নাই তাদের জন্য একটা কথাই বলবো আপনারাও তো শীঘ্রই ২০১ গম্বুজ মসজিদটি দেখতে যেতে পারেন । এর নান্দনিক ডিজাইন এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য আপনাদের মুগ্ধ করে তুলবে । তাই আপনারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ২০১ গম্বুজ মসজিদটি পরিদর্শন করতে পারেন ।